উপজেলা সদর থেকে দেহেরগতি ইউনিয়নের প্রত্যান্ত অঞ্চল বাহেরচরের সুগন্ধ নদী তীরে ১৯৬৪ ইংরেজী সালে প্রতিষ্ঠিত বাবুগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স । একটা সময় ছিলো যখন কোন ডাক্তার পাওয়া যেতো না এই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। অব্যবস্থাপনা ও অযত্নে ভঙ্গুর দশায় পৌছেছিল ৩১ শয্যা বিশিষ্ট্য সরকারি হাসপাতালটি। বর্তমানে চিকিৎসালয়টিতে ৮ জন মেডিকেল অফিসারসহ একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তার প্রতিনিয়ত বহি:বিভাগ ও আন্ত:বিভাগে চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছে। চালু রয়েছে ২৪ ঘন্টা জরুরি বিভাগের সেবা কার্যক্রম।
বর্তমানে হাসপাতালটিতে বিভিন্ন পদে মঞ্জুরিকৃত জনবল সংখ্যা ৭৯ জন হলেও কর্মরত রয়েছে ৪৭জন। গত দেড় বছরে হাসপাতালটির অবকাঠামো ও স্বাস্থ্যসেবায় দৃশ্যমান উন্নতি লক্ষনীয়। এক সময়ের কল্পনাতীত বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়ে প্রায় দেড় বছর আগে প্রতিষ্ঠানটির হাল ধরেন বর্তমান উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (টঐ ্ ঋচঙ) ডাঃ সুবাস সরকার। তিনি ২০২০ সালের ২৭ জানুয়রি দায়িত্বগ্রহনের পর থেকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ব্যবস্থাপনায় আমূল পরিবর্তন নিয়ে আসেন। দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে তিনি এক ঝাঁক তরুণ মেডিকেল অফিসার নিয়ে কাজ শুরু করেন।প্রথমে রোগীদের সেবাদানে পর্যাপ্ত ঔষধ সরবরাহ ও আউটডোরে চিকিৎসা সেবা নিশ্চত করেন। পুরো হাসপাতাল এরিয়া বর্জ ব্যবস্থাপনায় পরিবর্তন এনে পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার মাধ্যমে হাসপাতালটি রোগী, চিকিৎসক ও ভিজিটরদের উপযোগী করে তোলেন। সাম্প্রতিক হাসপাতালে কর্মরত দন্ত বিশেষজ্ঞ (ডেন্টাল সার্জন) ডাঃ আশফাকুর রহমানের সাথে আলাপ কালে যায়যায়দিনকে এসব কথা বলেন। তিনি আরো বলেন, বর্তমানে পুরো হাসপাতালটি সিসি ক্যামেরায় নিয়ন্ত্রিত।
উপেজলা স্বাস্থ্যকর্মকর্তা সুবাস সরকারের প্রচেষ্টায় সেন্ট্রাল অক্সিজেনের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা, বহিঃবিভাগে আগত রোগীদের জন্য বসার ও সুপেয় নিরাপদ পানির ব্যবস্থা, করোনা রোগীদের জন্য অক্সিজেন সিলিন্ডার ব্যবস্থা, করোনা কালিন সময় টেলি মেডিসিন সেবা চালু, আন্ত:বিভাগ রোগীদের খাবার মান পরিবর্তন সহ বেশ কিছু পদক্ষেপ নেওয়ায় হাসপাতালটি প্রাণ ফিরে পেয়েছে।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, হাসপাতালটি ৫০ শয্যায় উন্নতি হলেও এখন ৩১ শয্যার কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এখন আর নেই কোন দালাল ও বহিরাগতদের উপদ্রপ। প্রত্যেক ষ্টাফের গলায় ঝুলিয়ে দেয়া হয়েছে পরিচয় পত্র। ঝোপঝাড়, জঙ্গল আর দুর্গন্ধময় যায়গায় এখন শোভা পাচ্ছে ফুলের বাগান। সরেজমিন হাসপাতালে গিয়ে দেখা গেছে এমনই চিত্র। ডাক্তার, নার্স ও ষ্টাফ কিছুটা সংকট থাকলেও প্রতিদিন নিরলসভাবে এলাকাবাসীকে স্বাস্থ্যসেবা দিয়ে যাচ্ছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। রিমোট এরিয়ায় হওয়া আগে রোগীর দেখা না মিললেও বর্তমানে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ২শত রোগী বহিঃবিভাগে চিকিৎসা সেবা নিচ্ছেন। প্রসাব, রক্ত, ইসিজি পরিক্ষার মাধ্যমে রোগ নির্নয়ের মাধ্যমে চিকিৎসা সেবা দেওয়া হচ্ছে। নতুন জিন এক্সপার্ট মেশিন এর মাধ্যমে যক্ষা রোগী সনাক্ত করণ ও ভায়া সেন্টারে জরায়ুর মুখে ক্যান্সার পরিক্ষা এবং চিকিৎসা চালু রয়েছে।হাসপাতালটিতে এক্সরে মেশিন, আল্টাসাউন্ড মেশিন স্থাপন করা হলেও টেকনোলজিস্টের অভাবে এখনও এসব পরিক্ষা-নিরিক্ষা করা হচ্ছে না। তবে শিঘ্রই টেকনোলিজস্টের ব্যবস্থা করার চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন কর্তপক্ষ। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ সুবাস সরকার বলেন, প্রত্যান্ত অঞ্চলে হওয়ায় আগে এখানে চিকিৎসকরা থাকতে চাইতো না। এখন সবসময় ডাক্তার স্টেশনে অবস্থান করছে। কেউ এসে সেবা বঞ্চিত না হয় সেই দিকটায় বেশি খেয়াল রাখা হচ্ছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা , জনপ্রতিনিধি ও রাজনৈতিক দলগুলোর মনোভাব ভালো থাকায় হাসপাতাল ব্যবস্থাপনায় আমুল পরিবর্তন আনা সম্ভব হয়েছে।
গণমাধ্যম, ঝালকাঠি, দেশজুড়ে, পটুয়াখালী, পিরোজপুর, বরগুনা, বরিশাল, বরিশাল বিভাগ, ভোলা, মেইন লিড, শিরোনাম, সাব-লিড