ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে বরগুনাগামী এমভি অভিযান-১০ লঞ্চে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের ঘটনায় দুপুর সাড়ে ১২ পর্যন্ত ৩৯ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় দগ্ধ ও নিখোঁজ রয়েছেন অনেকে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে হতাহতদের নাম-পরিচয় জানা যায়নি।
বৃহস্পতিবার (২৩ ডিসেম্বর) দিনগত রাত ৩টার দিকে সুগন্ধা নদীর গাবখান ধানসিঁড়ি এলাকায় ঢাকা থেকে বরগুনাগামী লঞ্চটিতে আগুন লাগে।খবর পেয়ে বরিশাল, পিরোজপুর, বরগুনা ও ঝালকাঠির কোস্টগার্ডসহ ফায়ার সার্ভিসের ৫টি ইউনিট উদ্ধার কাজ করছেন। দগ্ধদের মধ্যে ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে শতাধিক ও ৭২জনকে বরিশাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বাকিরা আশপাশের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এ পযন্ত আহত ও নিখোজ সংখা পাওয়া যায়নি।
শুক্রবার (২৪ ডিসেম্বর) বরিশাল ফায়ার সার্ভিসের উপ-পরিচালক কামাল হোসেন ভূঁইয়া এক ব্রিফিংয়ে এ তথ্য সংগ্রামী বাংলাকে নিশ্চিত করেছেন।তিনি বলেন, লঞ্চটির ইঞ্জিন কক্ষ থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।জানা গেছে, লঞ্চটি ঢাকা থেকে বরগুনা যাচ্ছিল। এতে প্রায় হাজারখানেক যাত্রী ছিলেন। ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে থাকা অবস্থায় লঞ্চটিতে আগুন লাগে। পরে পার্শ্ববর্তী দিয়াকুল এলাকায় ভেড়ানো হয়।
লঞ্চের একাধিক যাত্রী জানান, রাত ৩টার দিকে লঞ্চের ইঞ্জিনরুমে হঠাৎ আগুন লেগে যায়। আগুন ছড়িয়ে পড়ে পুরো লঞ্চে। এসময় লঞ্চে বেশ কয়েকজন যাত্রী দগ্ধ হন। প্রাণে বাঁচতে অনেক যাত্রীই নদীতে ঝাঁপ দেন।
সাইদুর নামের এক যাত্রী জানান, ‘রাতে ঢাকা থেকে বরগুনা ফিরছিলাম। লঞ্চটি ঝালকাঠি গাবখান এলাকায় পৌঁছালে ইঞ্জিনরুমে আগুন লেগে যায়। এরপর সে আগুন পুরো লঞ্চে ছড়িয়ে পড়ে। অসংখ্য মানুষ অগ্নিদগ্ধ হয়। প্রাণে বাঁচতে নদীতে ঝাপ দেন অনেক যাত্রী।’নদী পাড়ে অপেক্ষায় থাকা আমেনা খাতুন জানান, ‘তার ভাই ঢাকা থেকে এ লঞ্চে করে রওনা দিয়েছেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত তার কোনো খোঁজ পাচ্ছি না। আমার ভাইয়ের সন্ধান চাই।’তবে লঞ্চের কেবিন গুলোতে অনেক মৃত্যু যাত্রীদের হাড় ও মাথার খুলি দেখা গেছে।এদিকে চলন্ত লঞ্চে অগ্নিকান্ডের ঘটনায় স্বজনদের আহাজারিতে আকাশ বাতাস ভারি হয়ে উঠেছে ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীর তীর। শুক্রবার (২৪ ডিসেম্বর) সকাল থেকে নদী তীরের গাবখান ধানসিঁড়ি এলাকায় অগ্নিদগ্ধদের স্বজনরা ভিড় করেন।
লঞ্চটিকে বর্তমানে ঝালকাঠি সদর উপজেলার পোনাবালিয়া ইউনিয়নের দেউড়িসাইক্লোন শেল্টারের পাশে (বিষখালী নদীর তীরে) নোঙর করা হয়েছে।