বরিশালে শনিবার দিবাগত রাত থেকে রোববার সন্ধ্যা পর্যন্ত থেমে থেমে মাঝারি ও হালকা বৃষ্টি হচ্ছে। একই সঙ্গে এই অঞ্চলের নদ-নদীতে স্বাভাবিক উচ্চতার চেয়ে বেশি জোয়ার হচ্ছে। এ কারণে বরিশাল নগর ও বিভাগের সব কটি জেলার নিচু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। দুর্ভোগে পড়েছেন এসব এলাকার বাসিন্দারা। বৃষ্টির পানিতে বরিশাল নগরের রাস্তাঘাটে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হওয়ায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন নগরবাসী। বরিশাল পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানায়, বরিশালের কীর্তনখোলা, বরগুনার বিষখালী, পায়রা, পিরোজপুরের বলেশ্বর, ভোলার তেঁতুলিয়া, মেঘনা এসব নদ-নদীতে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে জোয়ার প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে এসব নদ-নদীর তীরবর্তী এলাকাগুলোর চর ও নিচু এলাকায় জোয়ারের পানি ঢুকে পড়েছে। শনিবার রাত থেকেই কীর্তনখোলা নদীর পানি বিপৎসীমার ২ সেন্টমিটার ওপরে, ঝালকাঠীর বিষখালী নদীর পানি ২ সেন্টিমিটার, ভোলা খেয়াঘাট সংলগ্ন তেঁতুলিয়া নদীর পানি বিপৎসীমার ২ সেন্টিমিটার, দৌলতখানের সুরমা-মেঘনা নদীর পানি বিপৎসীমার ৫৫ সেন্টিমিটার, তজুমদ্দিনের সুরমা-মেঘনা নদীর পানি বিপৎসীমার ৬৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। এছাড়া পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জের বুড়িশ্বর/পায়রা নদীর পানি বিপৎসীমার ৯ সেন্টমিটার, বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার বিষখালী নদীর পানি বিপৎসীমার ৫৩ সেন্টমিটার, পিরোজপুরের বলেশ্বর নদীর পানি বিপৎসীমার ৭ সেন্টমিটার ও উমেদপুরের কঁচা নদীর পানি বিপৎসীমার ১২ সেন্টমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। তবে বরগুনা সদরের ওপর দিয়ে প্রবাহিত বিষখালী নদীর পানি এখনো বিপৎসীমার নিচে অবস্থান করছে। রোববারও তা অব্যাহত থাকে।
শনিবার বিকেলে কীতর্নখোলা নদীর অস্বাভাবিক জোয়ারে বরিশাল সদরের দপদপিয়া, চরবাড়িয়া, কাউয়ার চর কালিজিরা, চরমোনাই ইউনিয়নের চর হোগলা, পশুরিকাঠি, গিলাতলী এবং নগরের রসুলপুর, পলাশপুর, আমানতগঞ্জ; জেলার মেহেন্দীগঞ্জ, হিজলা, মুলাদি উপজেলার অনেক এলাকা পানিতে প্লাবিত হয়েছে। রোববার সকাল ৬ টা থেকে সন্ধ্যা ৬ টা পর্যন্ত বরিশালে ৬৩ দশমিক ২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। এতে নগরের সদর রোড, বগুড়া রোড, পলিটেকনিক সড়ক, ব্রাউন কম্পাউন্ড, এম এ জলিল রোডসহ বিভিন্ন সড়কে জলাবন্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। ফলে নগরবাসী চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। রোববার দিনভর বৈরী আবহাওয়ার কারনে নগরে লোকজনের বাইরে চলাচল কম ছিল। অফিসমুখী ও জরুরি কাজ ছাড়া অধিকাংশ মানুষই ছিলেন ঘরবন্দী। বরিশাল আবহাওয়া বিভাগ বলছে, পশ্চিম মধ্য বঙ্গোপসাগর ও এর আশপাশের উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত সুস্পষ্ট লঘুচাপটি পশ্চিম ও উত্তর–পশ্চিম দিকে অগ্রসর ও ঘনীভূত হয়ে নিন্মচাপে পরিণত হয়েছে। চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরে আজ রোববারও ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, এর প্রভাবে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হতে পারে। আগামী ৭২ ঘন্টা বৃষ্টি ও ঝোড়ো আবহাওয়া অব্যাহত থাকতে পারে। আবহাওয়া কার্যালয়ের জ্যেষ্ঠ পর্যবেক্ষক মাসুদ রানা বলেন, পূর্ণিমা ও বায়ুচাপের পার্থক্যের আধিক্যের প্রভাবে উপক‚লীয় জেলাসমূহের দূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলোর নিন্মাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের পানিতে প্রাবিত হতে পারে। এ জন্য উপক‚লৈ এবং সাগরে মাছ ধরা ট্রলার ও নৌকাগুরোকে নিরাপদে অবস্থান নিতে বলা হয়েছে।
গণমাধ্যম, ঝালকাঠি, দেশজুড়ে, পটুয়াখালী, পিরোজপুর, বরগুনা, বরিশাল, বরিশাল বিভাগ, ভোলা, মেইন লিড, শিরোনাম, সাব-লিড