বিগত কাউন্সিলররা প্রতিশ্রুতি দিয়েও রাখতে পারেন। উন্নয়ন করতে পারেনি তেমন কোন। নির্বাচিত হলে সকল উন্নয়নসহ সামগ্রিক কাজ করে ওয়ার্ডকে সর্বোচ্চ আধুনিকায়নের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সিটি কর্পোরেশনের ১৪ নং ওয়ার্ডে চলছে নির্বাচনী প্রচারণা। তিন কাউন্সিলর প্রার্থীর এমন প্রচারণায় ওয়ার্ডের পাড়া মহল্লার অলিগলিতেও এখন বিরাজ করছে নির্বাচনী আমেজ। জনপ্রিয়তায় প্রায় কাছাকাছি এই তিন প্রার্থীরা হলেন : সাবেক কাউন্সিলর এ্যাড. সালাউদ্দিন মাসুম, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. শাকিল হোসেন পলাশ এবং সমাজসেবক তাজউদ্দিন তুহিন। গতকাল নির্বাচনী ওয়ার্ড পরিক্রমায় ১৪ নং ওয়ার্ডে গিয়ে আলাপ হয় সাধারণ ভোটার ও প্রার্থীদের সাথে। ভোটাররা জানায়, আয়তনের তুলনায় ঘনবসতিপূর্ণ এই ওয়ার্ডে দীর্ঘদিন কোন উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। বিগত কাউন্সিলর এর মাধ্যমে হয়নি কোন কাজ। আমাদের রাস্তাঘাট,ড্রেনেজ ব্যবস্থা, সড়ক বাতিসহ অনেক সমস্যা। তবে এই ওয়ার্ডে সবচেয়ে বড় সমস্যা মাদক। এই সমস্যা সমাধানে বিগত সময়ে প্রতিশ্রুতি দিলেও কোনো জনপ্রতিনিধি সমাধান করতে পারেনি। এসব সমস্যার সমাধান যে দেবে তাকে ভোট দিয়ে জয়ী করার কথা জানান এলাকার বাসিন্দারা। আলাপকালে প্রার্থী সালাউদ্দিন মাসুম বলেন, ২০১৩ থেকে ১৮ সাল পর্যন্ত এই ওয়ার্ডের নির্বাচিত কাউন্সিলর ছিলেন তিনি। জনগণের অংশগ্রহণমূলক ভোটে নির্বাচিত হয়েছিলেন। তৃতীয়বারের মতো নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন। ওয়ার্ডে নানাবিধ সমস্যা আছে জানিয়ে তিনি বলেন, কাউন্সিলর থাকাকালীন সময়ে এ সকল সমস্যার কিছু সমাধান করেছিলেন। ওয়ার্ডের রাস্তা ও ড্রেন এই দুইয়ের কোনটির অবস্থাই ভালো না। রাস্তাগুলো অনেক নিচু হয়ে যাওয়ায় বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা তৈরি হয়। ওয়ার্ডের প্রতিটি সড়ক উঁচু করা দরকার বলে জানান মাসুম। এবার নির্বাচিত হতে পারলে সর্বপ্রথম ওয়ার্ডের পরিবেশ দূষণ রোধ ও মাদক নিয়ন্ত্রণে কাজ করবেন। যারা মাদকের সাথে জড়িত তাদের সুস্থ জীবনে ফিরিয়ে এনে পুনর্বাসন করার ইচ্ছা আছে বলে জানান তিনি। ১৪ নং ওয়ার্ডের রিফিউজি কলোনির বাসিন্দাদের স্বাবলম্বী করার চেষ্টা করবেন। বিগত সময়ে যখন তিনি কাউন্সিলর ছিলেন তখন দেড়শ সেলাই মেশিন দিয়েছিলেন। তবে প্রশিক্ষিত না থাকায় এই মেশিনগুলো অনেকেই বিক্রি করে ফেলেছিলেন। কিন্তু এবার তাদের এ ধরনের সহায়তা দেওয়ার সাথে সাথে প্রশিক্ষিত করার ব্যবস্থা করবেন। যাতে করে সাহায্যের মাধ্যমে পুরো পরিবারটি স্বাবলম্বী হতে পারে। সুষ্ঠু ভোটে শতভাগ বিজয়ের আশাবাদ ব্যক্ত করেন এই প্রার্থী। ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাকিল হোসেন পলাশ বলেন,ওয়ার্ডের মানুষের সেবা করার জন্য তৃতীয়বারের মতো নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন। ১৪ নং ওয়ার্ডটি একটি অবহেলিত ওয়ার্ড। এই ওয়ার্ডে বিগত সময়ে কোন কাজ হয়নি। বিভিন্ন নাগরিক সমস্যার সাথে সাথে রয়েছে মাদকের ব্যাপক প্রভাব। জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হতে পারলে মূলত তিনি ওয়ার্ডের গরিব দুঃখীদের পাশে থাকতে চান। মাদক নির্মূল কমিটি গঠন করে শতভাগ চেষ্টা করবেন মাদক নির্মূলের জন্য। এই ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হওয়ায় বিগত সময়ে নাগরিক সুবিধারএকটি বড় অংশ তার মাধ্যমে ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের কাছে পৌঁছেছে। নির্বাচিত হতে পারলে যাবতীয় নাগরিক সুবিধাদি ওয়ার্ডের সকল ভোটারদের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেবেন বলে জানান। সর্বশেষ আলাপ করা হয় নতুন প্রার্থী তাজউদ্দিন তুহিনের সাথে। তিনি বলেন, পরিবারের ঐতিহ্য সাধারণ মানুষের সেবা করা। তাই জনগণের সেবা করতেই তিনি কাউন্সিলর পদে নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন। ওয়ার্ডে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা রয়েছে। ১৪ নং ওয়ার্ডের একটি বড় অংশ জুড়ে রয়েছে খাল। এই খালে পূর্বে নৌকা চলাচল করত। তবে খালটি এখন প্রায় মৃত। জলাবদ্ধ হয়ে থাকায় এই খালের কারণে ওয়ার্ডের পরিবেশ দূষণ হচ্ছে। বাড়ছে মশার উপদ্রবসহ রোগ ব্যাধি। নির্বাচিত হলে প্রথমে এই খালটিকে বাঁচানোর চেষ্টা করবেন। বিগত কাউন্সিলররা জনগণকে দেয়া প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে পারেনি। সালিশ ও বিচার ব্যবস্থাকে করেছে প্রশ্নবিদ্ধ। নির্বাচিত হওয়া না হওয়া বড় বিষয় না। তার পরিবার সর্বদা ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের পাশে ছিলেন তিনিও থাকবেন। রিফুজি কলোনি একটি অবহেলিত এলাকা। এই এলাকায় প্রতি আমার সার্বক্ষনিক সুনজর থাকবে। সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভোট হলে তার জয় সুনিশ্চিত বলে জানেন এই প্রার্থী। মো. রিয়াদ খান সাজন বলেন, সকলের সাথেই একটা সৌহার্দপূর্ন সম্পর্ক রয়েছে। একজন সাধারণ মানুষ হিসেবে নাগরিক সমস্যা সমূহের সম্পর্কে ধারনা রয়েছে। তাই নির্বাচিত হলে এই ওয়ার্ডের প্রতিটি রাস্তা সংস্কার করবো, যেখানে রাস্তা নেই সেখানে নতুন রাস্তা নির্মান করবো। প্রতিটি হোল্ডিং নাম্বার প্রাপ্ত বাড়ির সামনে উন্নত ড্রেনেজ ব্যবস্থা করে দেয়া হবে। ওয়ার্ডের সকল বাড়িতে বাড়িতে সুপেয় পানির জন্য টিউবওয়েল স্থাপন করে দেয়া হবে। একটি সরকারি প্রাইমারি স্কুল নির্মান করা হবে, যেখানে ছেলেমেয়েরা সুশিক্ষিত হবার সুযোগ পাবে। পাশাপাশি বাচ্চাদের খেলাধুলার জন্য খেলার মাঠসহ খেলাধুলার সরঞ্জাম উপহার দিয়ে পরবর্তী প্রজন্মকে একটি মাদকমুক্ত ওয়ার্ডে পরিনত করতে চাই। ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করলে নাগরিকদের সেবায় দিন-রাত নিয়োজিত থাকার প্রতিজ্ঞাবদ্ধ থাকবেন। উল্লেখ্য, ১৪ নং ওয়ার্ডে মোট ভোটার সংখ্যা ৭ হাজার ৪শ। তিনটি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
গণমাধ্যম, ঝালকাঠি, দেশজুড়ে, পটুয়াখালী, পিরোজপুর, বরগুনা, বরিশাল, বরিশাল বিভাগ, ভোলা, মেইন লিড, রাজনীতি, শিরোনাম, সাব-লিড