ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াস’ মোকাবেলায় প্রস্তুত রাখা হয়েছে বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলের ৬ জেলার প্রায় পাঁচ হাজার আশ্রয়ন কেন্দ্র। এসব আশ্রয়ন কেন্দ্রে এক সঙ্গে ২০ লক্ষ মানুষকে আশ্রয় দেয়া যাবে। এরই মধ্যে আশ্রয় কেন্দ্র গুলো প্রস্তুত করা হয়েছে। নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ এবং বিদ্যুৎ না থাকলে জেনারেটর, মোমবাতি, দিয়াশলাইসহ সবকিছু প্রস্তুত রাখা হয়েছে।ঘূর্ণিঝড়ের বিষয়ে উপকূলে সতর্কতামূলক মাইকিং এবং ঘুর্ণিঝড়ের আগেই সকল মানুষ এবং গবাদী পশু আশ্রয়ন কেন্দ্রগুলোতে নিয়ে আসার নির্দেশ দিয়েছেন বরিশালের বিভাগীয় কমিশনার মো. সাইফুল হাসান বাদল। পাশাপাশি আশ্রয়গ্রহণকারীদের জন্য সুকনা খাবারের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা রাখার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।সোমবার (২৪ মে) সকালে ঘুর্ণিঝড় ‘ইয়াস’ মোকাবেলায় পূর্ব প্রস্তুতির অংশ হিসেবে বিভাগীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির জরুরি সভায় বরিশাল বিভাগের ছয়টি জেলার জেলা প্রশাসক এবং বিভিন্ন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের এই নির্দেশ দিয়েছেন কমিটির সভাপতি ও বিভাগীয় কমিশনার।অনলাইন প্লাটফর্মে (জুম কনফারেন্স) অনুষ্ঠিত ভার্চুয়াল সভায় বিভাগীয় সদর দপ্তর থেকে অংশগ্রহণ করেন বিভাগীয় কমিশনার মো. সাইফুল হাসান বাদল। তাছাড়া জেলা প্রশাসকরা স্ব স্ব জেলার কার্যালয় থেকে ভার্চুয়ালী অংশগ্রহণ করেন। এতে জেলা এবং উপজেলা প্রশাসন ছাড়াও বরিশাল রেঞ্জ ডিআইজি (পদোন্নতিপ্রাপ্ত অতিরিক্ত আইজি) মো. শফিকুল ইসলাম, বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. শাহাবুদ্দিন খানসহ প্রশাসনের অন্যান্য কর্মকর্তারা অংশগ্রহণ করেন।বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার ও বিভাগীয় কমিশনারের একান্ত সচিব পিয়াস চন্দ্র দাস তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, ‘দুর্যোগ মোকাবেলায় বিভাগীয় প্রশাসনের পক্ষ্য থেকে বিবিন্ন নির্দেশনা দিয়েছেন কমিশনার স্যার। বিশেষ করে সাইক্লোন সেল্টারগুলো প্রস্তুত রাখতে বলেছেন। সেখানে যাতে দুর্যোগকালিন সময়ে খাদ্যের ঘাটতি না হয় সে বিষয়টিতে গুরুত্ব দিতে বলেছেন তিনি।এছাড়া দুর্যোগকালে ঘর-বাড়ি ছেলে সাইক্লোন সেল্টারে আশ্রয় নেয়া মানুষের বাড়ি-ঘরের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশ প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছেন। এসময় যাতে চুরি-ডাকাতি না হয় সে বিষয়ে সকলকে সজাগ থাকতে বলেছেন। আশ্রয়নকেন্দ্র গুলোতে যাতে কোন অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে সে দিকেও খেয়াল রাখতে বলেন তিনি।পিয়াস চন্দ্র দাস আরও জানান, ‘বরিশাল বিভাগের ৬টি জেলায় প্রায় পাঁচ হাজার আশ্রয়ন কেন্দ্র প্রস্তুত করা হয়েছে। যার মধ্যে সাইক্লোন সেল্টার, দুটি মুজিব কেল্লা এবং বিভিন্ন স্কুল রয়েছে। প্রয়োজনে কলেজগুলোও ব্যবহার করা হবে। প্রস্তুত করা আশ্রয়ন কেন্দ্রে এক সঙ্গে ২০ লক্ষ মানুষ আশ্রয় নিতে পারবে। দক্ষিণাঞ্চলের উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষদের আগেভাগেই আশ্রয়ন কেন্দ্রে নিয়ে আসতে বলেন তিনি। পাশাপাশি তাদের গবাদী পশু রাখার ব্যবস্থাও রয়েছে আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে।এছাড়া দুর্যোগের সময় এবং দুর্যোগ পরবর্তী দ্রুত ব্যবস্থাপনায় পুলিশ প্রশাসন ও ফায়ার সার্ভিসকে প্রস্তুত থাকতে নির্দেশ দিয়েছেন বিভাগীয় কমিশনার। বিদ্যুৎ সরবরাহের বিষয়ে সার্বিক প্রস্তুতি নিতে বলেছেন বিদ্যুৎ বিভাগকে। এছাড়াও আরও নানা বিষয়ে দিক নির্দেশনা দিয়েছেন বিভাগীয় কমিশনার সাইফুল হাসান বাদল।এদিকে, বরিশাল জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার সুব্রত বিশ্বাস দাস বলেন, ঘুর্ণিঝড় ‘ইয়াস’ মোকাবেলায় বরিশাল জেলায় মোট ৩১৬টি বিশেসায়িত সাইক্লোন শেল্টার ও ৭৫৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আশ্রয় কেন্দ্র হিসেবে প্রস্তুত করা হয়েছে। এর পাশাপাশি দুর্যোগকালিন সময়ে আশ্রয় কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহারের জন্য ৭৫৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাকা ভবন রয়েছে। যেখানে সব মিলিয়ে ৬ লাখ ৪২ হাজার মানুষ এবং প্রায় ৫০ হাজার গবাদী পশু নিরাপদ আশ্রয় নিতে পারবে।তিনি বলেন, ‘বিভাগীয় কমিশনারের নির্দেশনা অনুযায়ী জেলায় বিতরণের জন্য ৮৪ মেট্রিক টন চাল ও নগদ ১৫ লাখ টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। পাশাপাশি জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সার্বক্ষনিক মন্ত্রণালয়ে এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হচ্ছে।
ঝালকাঠি, দেশজুড়ে, পটুয়াখালী, পিরোজপুর, বরগুনা, বরিশাল, বরিশাল বিভাগ, ভোলা, মেইন লিড, শিরোনাম, সাব-লিড