বরিশাল জেলা ছাত্রদলের প্রস্তাবিত কমিটি নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা চলছে। বরিশাল বিএনপি ও ছাত্রদলের নেতা কর্মীদের মধ্যে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। রাজপথে দীর্ঘদিন আন্দোলন সংগ্রামে অংশ নিয়ে হামলা-মামলার শিকার হওয়া নেতাকর্মীরা কমিটিতে যোগ্য মূল্যায়ন না হওয়ার আশংকায় অনেকেই সংক্ষুব্ধ। মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটির সভাপতি সম্প্রতি কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের নিকট বরিশাল জেলা ছাত্রদলের একটি প্রস্তাবিত জমা দিয়েছেন। এ নিয়ে ব্যাপক তোলপাড় চলছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়- ২০১৮ সালে মাহফুজুল আলম মিঠুকে সভাপতি ও কামরুল ইসলামকে সাধারণ সম্পাদক করে বরিশাল জেলা ছাত্রদলের সুপার ফাইভ কমিটি গঠন করে। উৎকোচ গ্রহণ করে ইউনিট ছাত্রদলের কমিটি দেওয়ার অভিযোগে জেলা ছাত্রদল সভাপতি মিঠুকে বহিস্কার করে কেন্দ্রীয় ছাত্রদল। পরে নানান লবিং-তদ্বির করে তা প্রত্যাহার করা হয়। কেন আন্দোলন সংগ্রামে বরিশালে অংশগ্রহণ না করায় নির্যাতিত মাঠের ছাত্রদল নেতা-কর্মীদের সাথে মিঠু ও কামরুলের দূরত্ব বাড়ে, তৈরি হয় বৈরিতা।। প্রায় এক বছরের অধিককাল সভাপতি মিঠু রাজধানী ঢাকায় অবস্থান করেন। দলের দুর্দিনে সভাপতিকে রাজপথে না পেয়ে ক্ষুব্ধ তৃণমূলের নেতাকর্মীরা। বেশির ভাগ ইউনিট কমিটিগুলোতে পকেট কমিটি করার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
বরিশাল দক্ষিণ ও উত্তর জেলা বিএনপির সভাপতি সম্পাদক এবং মাঠপর্যায়ের ছাত্রদলের নেতা কর্মীদের সাথে কোন রকম আলোচনা বা সমন্বয় ছাড়াই সম্প্রতি বরিশাল জেলা ছাত্রদলের একটি প্রস্তাবিত কমিটি কেন্দ্রে জমা দেওয়া হয়। ওই কমিটিতে কাদের নাম দেয়া হয়েছে তাও জানেন না এখানকার কোন রাজনৈতিক। ছাত্রদলের পকেট কমিটি করা হলে আগামীতে সরকার বিরেধী আন্দোলনে কর্মী পাওয়া কঠিন হবে বলে মনে করছেন এখানকার রাজনৈতিকরা। যোগ্য ও ত্যাগী নেতাকর্মীদের দূরে ঠেলে দিয়ে এভাবে কমিটি করা হলে দলের দুঃসময় এটা আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত হবে বলে মনে করছেন অনেকে।
উল্লেখ্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্রদল সভাপতিকে মারধরের ঘটনায় বরিশাল জেলা ছাত্রদল রাজপথেই দাড়াতে পারেনি। নগরীর বগুড়া রোডে জেলা ছাত্রদল সাধারণ সম্পাদক কামরুল ইসলাম ৬/৭ জন কর্মী নিয়ে একটা তিন মিনিটের ঝটিকা মিছিল বের করে ফটোশেসনে অংশ নিয়ে চলে যায়। এছাড়া বরিশাল জেলা ছাতদল নেতা সবুজ আকনের নেতৃত্বে একটা বড় মিছিল বের হলেও পুলিশী চাপে তারা রাজপথে বেশিক্ষণ টিকতে পারেনি। এ ছাড়া রাজপথে নেতাকর্মী নিয়ে সক্রিয় ছিলেন জেলা ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক সোহেল রাঢ়ীও। এভাবেই চলছে বরিশালে ছাত্রদলের কর্মসূচি পালন।
নির্যাতিতরা নতুন কমিটিতে মূল্যায়ন হবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে বরিশাল দক্ষিণ জেলা বিএনপির সভাপতি এবায়দুল হক চান বলেন, জেলা ছাত্রদলের প্রস্তাবিত কমিটির বিষয়ে তার সাথে কেউ সমন্বয় করেনি। তিনি যোগাযোগের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছেন।
একই প্রসঙ্গে উত্তর জেলা বিএনপির সভাপতি সাবেক এমপি মেজাবাহ উদ্দিন ফরহাদ জানান, বরিশাল জেলা ছাত্রদলের প্রস্তাবিত কমিটির বিষয় তিনি কিছুই জানেন না। ছাত্রদল সভাপতি বা সম্পাদক কেউই তাদের সাথে সমন্বয় করেনি। জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম শাহিনও একই কথা বলেন।
এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. জুয়েল জানান, সকলের সাথে সমন্বয় করেই কমিটি জমা দেওয়ার সাংগঠনিক তাগিদ আছে। কেন্দ্রীয় ছাত্রদল এ বিষয়ে যথেষ্ট সচেতন আছে।
জানা গেছে, বর্তমান জেলা ছাত্রদলের বিরুদ্ধে ঘুষ কেলেংকারির অভিযোগ উঠলে কেন্দ্রীয়ভাবে বরিশাল বিভাগের দায়িত্বে থাকা দুই নেতাকেও দায়িত্ব পুর্নবন্টন করা হয়েছে। বরিশালে বিএনপির সকল কর্মসূচিতে হাতেগোনা কয়েকজন ছাড়া অনেক পদপদবী ওয়ালাদেরকে রাজপথে দেখা মেলেনা। এমন নেতারা পদ পেলে পিছিয়ে যাবে এখানকার বিএনপি ও ছাত্রদল। এমনটাই বলছেন তৃণমূলের বিএনপি নেতারা।
তবে পূর্ণাঙ্গ কমিটির প্রস্তাবনা নিয়ে দুই নেতার বিরুদ্ধে যে সমন্বয়হীনতার অভিযোগ উঠেছে, তা অস্বীকার করেছেন জেলার সভাপতি মাহফুজ আলম মিঠু। তিনি দাবি করেছেন, যারা এমন অভিযোগ করছেন তারাই সুপারিশ করেছেন এবং তাদের স্বাক্ষরিত প্যাডও কেন্দ্রে জমা আছে।’
গণমাধ্যম, ঝালকাঠি, দেশজুড়ে, পটুয়াখালী, পিরোজপুর, বরগুনা, বরিশাল, বরিশাল বিভাগ, বিনোদন, ভোলা, মেইন লিড, রাজনীতি, শিরোনাম, সাব-লিড