দেশের ষষ্ঠ অভয়াশ্রমে দুইমাসের জন্য মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞা শুরু হয়েছে পহেলা মার্চ থেকে। কড়া নজরদারিতে শুরু হওয়া এ নিষেধাজ্ঞা সফল হলে এ বছর অন্তত ৭০ কোটি টাকা মূল্যের ১০ হাজার মেট্রিক টন অতিরিক্ত ইলিশ উৎপন্ন হওয়ার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। এ লক্ষ্য অর্জনে পুলিশ ও কোস্ট গার্ডকে সাথে নিয়ে মাঠে নেমেছে মৎস্য বিভাগ। ব্যক্ত করা হয়েছে লক্ষ্য অর্জনের দৃঢ় প্রত্যয়। কীর্ত্তনখোলা, আড়িয়াল খা, মাসকাটা, কালাবদর, গজারিয়া, নয়াভাঙ্গুলি ও মেঘনা এই ৭টি নদীর ৮২ কিলোমিটার দীর্ঘ এলাকায় নিয়ে ঘোষিত ইলিশের এই অভয়াশ্রম। ইলিশসহ মিঠা পানির মাছ রক্ষায় এর সময় দুই মাসের জন্য এখানে বাচ্চাসহ নির্বিঘেœ অবস্থান করতে পারলে তা হবে অর্থনীতির জন্য অনেক সহায়ক। বরিশালের ৭ নদীর এই ৮২ কিলোমিটার স্থানটিতে আগে প্রতি বছর এই সময়টায় মাছ ধরা হতো। তার পরেও এই স্থানটিতে প্রতি বছর ২০ হাজার মেট্রিক টন ইলিশ উৎপাদন হত। কিন্তু ২০২০ সাল থেকে অভয়াশ্রম ঘোষনা হওয়ায় পহেলা মার্চ থেকে ৩০ এপ্রিল মাছ ধরা বন্ধ থাকায় গত বছর এখানে অন্তত ২০ হাজার টন বেশি ইলিশ উৎপাদন হয় । এবারে তা ৫০ হাজার টন ছাড়িয়ে যাবে বলে আশাবাদ মৎস্য বিভাগের। এজন্য তারা অভিযান কঠোর করতে বদ্ধ পরিকর বলে জানিয়েছেন বরিশালের ইলিশ কর্তা বিমল চন্দ্র দাস। এদিকে এ লক্ষ্য অর্জনে বুধবার থেকেই দিন রাত এই অভয়াশ্রমের সব নদীতে ১৬০ নৌ পুলিশ ও প্রায় একশ কোস্ট গার্ড সদস্যদের অবিরাম টহল শুরু করেছে। উদ্বুদ্দকরন করা হচ্ছে জেলেদের। পুরো নদীগুলোকে রাখা হচ্ছে জাল ও জেলেমুক্ত করে। এর পরেও এবারে যাবা মাছ ধরার চেস্টা করেছে তাদের মধ্যে গত দু সপ্তায় ১৮৮ জনকে গ্রেপ্তার করে জেল জরিমানা করেছে পুলিশ। পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে এক কোটি ৩৮ হাজার মিটার জাল। জব্দ করা হয় ৬ টন ইলিশ জানিয়েছেন বরিশাল অঞ্চল নৌ পুলিশের সুপার মোঃ কফিল উদ্দিন। তবে প্রনোদনার চাল এখনো হাতে না পাওয়ায় এই অভয়ারন্যে মাছ ধরা নিষেধ অভিযানকে ভালোভাবে নেয়নি এর দু ধার ঘিরে গড়ে ওঠা জেলে পল্লীগুলোর অন্তত ৫০ হাজার জেলে। তারা এই অভিযানকে স্বাগত জানালেও বলেছে নিত্যপন্যের উর্ধ্বগতির এই সময়টায় চাল না দিয়ে অভিযান শুরু করায় এর ফলে সৃষ্ট জেলে জীবনের আকস্মিক দুর্দশায় তারা বিপর্যস্থ। এরা দাবি করেছে অভিযানের নামে আইন শৃংখলা বাহিনীর হয়রানির কথা। কিন্তু মৎস্য বিভাগ বলেছে অভিযান শুরুর সময়েই জেলেদের প্রনোদনার চাল তাদের হাতে পৌছে দেয়ার দাপ্তরিক সব কাজ শেষ করা হয়েছে। তাদের মতে শুধু ইলিশ নয় মিঠে পানির অধিকাংশ মাছের জন্য অভয়াশ্রমে এই সময়টা নিরাপদ রাখতে হবে। এজন্য যা প্রয়োজন তাই করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ আসাদুজ্জামান। বরিশাল জেলায় ৭৫ হাজার জেলে পরিবারের মধ্যে ৫১ হাজার প্রনোদনার তালিকাভুক্ত প্রান্তিক জেলে। স্থানীয়রা বলেছেন এমন অভিযান শুরুর আগে জেলেদের জন্য নির্ধারিত চাল আগে তাদেরকে পৌছুলে তা হতো মানবিক। এ বিষয়ে জেলা খাদ্য কর্মকর্তা বলেছেন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ঠিক সময়ে চাল সরবরাহ না করায় এখনো তা জেলে পায়নি।
গণমাধ্যম, ঝালকাঠি, দেশজুড়ে, পটুয়াখালী, পিরোজপুর, বরগুনা, বরিশাল, বরিশাল বিভাগ, ভোলা, মেইন লিড, শিরোনাম, সাব-লিড