খাগড়াছড়িতে বাগানে বাগানে এখন কড়া মিষ্টি স্বাদের আম্রপালি আম। ফলনও ভালো হয়েছে এবার। তবু কৃষকের মুখে হাসি নেই। কারণ, এই আম্রপালি অন্য জেলায় নেওয়ার সময় পথে পথে সরকারি সংস্থার টোল ও অবৈধভাবে নানা সংগঠনকে চাঁদা দিতে হয়। খাগড়াছড়ি থেকে চট্টগ্রাম, ফেনী, নোয়াখালী ও ঢাকায় নেওয়ার পথে দিতে হয় এই চাঁদা ও টোল। আমচাষি ও ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, একই আমের গাড়ি থেকে পৌরসভা ও জেলা পরিষদ মোট তিন দফায় টোল আদায় করছে। আবার তিন আঞ্চলিক দলের নাম ভাঙিয়ে নেওয়া হয় তিন দফা চাঁদা। এর বাইরে পুলিশকেও গাড়িপ্রতি এক দফা চাঁদা দিতে হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। তাতে দুই টনের প্রতি গাড়িতে সাতবার টোল-চাঁদায় কমপক্ষে ৬ হাজার ৯০০ টাকা বাড়তি খরচ হচ্ছে ব্যবসায়ীদের। কেজিতে বাড়তি খরচ দাঁড়ায় তিন টাকার কম-বেশি। পাহাড়ের বাকি দুই জেলায় আম পরিবহনে এত বাড়তি খরচ হয় না। বান্দরবানে দুই টনের গাড়ি থেকে সব মিলিয়ে সাড়ে তিন হাজার টাকা ও রাঙামাটিতে আদায় হয় আড়াই হাজার টাকা।
টোল ও চাঁদার মতো বাড়তি খরচের হিসাব করে অনেক ব্যবসায়ী এবার খাগড়াছড়ি থেকে আম নিতে নিরুৎসাহিত হচ্ছেন বলে জানিয়েছেন চাষিরা। তাঁরা বলছেন, গত বছর এমন সময়ে খাগড়াছড়িতে প্রতি কেজি আম বিক্রি হয়েছে ৪০ থেকে ৪২ টাকায়। এখন বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৩২ টাকায়। জেলার আমচাষি মাইশছড়ির রবিন চাকমার মুখেই শোনা যাক। রবিন চাকমা ২৫ একরের বাগানের পাঁচ একর আম ইতিমধ্যে বিক্রি করেছেন। রবিন চাকমা জানান, কিছুদিন আগে এক ব্যবসায়ী ঢাকা থেকে এসে তাঁর বাগান দেখে গেছেন। কিন্তু পরে পরিবহনের পাশাপাশি অন্যান্য খরচ দেখে তিনি আম না নিয়েই ফিরে যান। এ বিষয়ে জানতে চাইলে খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসক মো. সহিদুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আঞ্চলিক দলগুলোর চাঁদাবাজির বিষয়ে কেউ অভিযোগ করে না। করলে ব্যবস্থা নেব। এ ছাড়া জেলা পরিষদ ও পৌরসভার টোলের বিষয়টিও জানি না। এখন যেহেতু জানলাম, আমি খতিয়ে দেখব।