সারাদেশে গত ২৪ ঘণ্টায় বজ্রাঘাত ও বিদ্যুতায়িত হয়ে অন্তত ১৬ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এনিয়ে দেশের গণমাধ্যমগুলোতে খবর প্রকাশিত হয়েছে। প্রকাশিত সংবাদে জানা গেছে, রাজধানীর মালিবাগে ঝড়-বৃষ্টির সময় বজ্রপাতে দুই শিশুসহ তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। বেলা ২টার দিকে চৌধুরীপাড়ায় আবুল হোটেলের পেছনে সোনামিয়ার গলিতে এ ঘটনা ঘটে।
হাতিরঝিল থানা পুলিশের ওসি আব্দুর রশিদ সাংবাদিকদের বলেন, দুপুরে বৃষ্টির মধ্যে বজ্রপাতের সময় তিনজনের মৃত্যুর খবর পেয়েছেন তারা। এরা হলেন- আব্দুল হক (৬৫), সাবিনা ওরফে পাখি (১০) ও ঝুমা (১২)। তবে বজ্রপাতে নাকি বিদ্যুতায়িত হয়ে তাদের মৃত্যু হয়েছে তা জানাতে পারেননি ওসি। যদিও সাবিনার মা জানিয়েছেন, বিদ্যুতায়িত হয়ে তার মেয়ের মৃত্যু হয়েছে।
রাজধানীর গুলশানে বিদ্যুৎস্পর্শ হয়ে শাহিন (৩৮) নামের এক নির্মাণ শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। শনিবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে। শাহিনের বাবার নাম নুরুল ইসলাম মোল্লা। তার বাড়ি বরিশালে। ঈদের পরই ভবনটিতে কাজ করতে আসেন তিনি। শাহিনের সহকর্মী কামাল হোসেন জানান, গুলশান-১, মহাখালী রোডের ১৩ নম্বরে নির্মাণাধীন একটি ভবনে রডমিস্ত্রি হিসেবে কাজ করতেন শাহিন। থাকতেন ওই ভবনেই। সকালে ভবনটির নিচতলায় কাজ শুরু করার আগ মুহূর্তে লোহার দরজা থেকে বিদ্যুৎস্পর্শ হয়ে অচেতন হয়ে পড়েন তিনি। এরপর তাকে দ্রুত ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেয়া হলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্মাণাধীন ল্যাবরেটরি ভবনে নির্মাণ কাজ করার সময় বিদ্যুৎস্পর্শ হয়ে শফিকুল নামে এক নির্মাণ শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার সন্ধ্যায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত শফিকুল (২৩) ঢাকার নবাবগঞ্জ থানার বলমন্তচর এলাকার সেন্টু মিয়ার ছেলে। ফতুল্লা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রকিবুজ্জামান জানান, সন্ধ্যায় বিদ্যুৎস্পর্শ হলে ওই শ্রমিককে শহরের ভিক্টোরিয়া হাসপাতালে নেয়া হয়। এ সময় সেখানে দায়িত্বরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
রাজধানী ঢাকা জেলার ধামরাইয়ে বজ্রপাতে আব্দুল খালেক নামে এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। শনিবার সকাল ৭টার দিকে বজ্রপাতে মারা যান ওই কৃষক। খালেক উপজেলার কুল্লা ইউনিয়নের বড় কুশুরিয়া এলাকার বাবু ব্যাপারীর ছেলে।
মুজিবনগরে ছাদের ওপর থেকে স্টিলের পাইপ নামানোর সময় বিদ্যুৎ তারে লেগে বিদ্যুৎস্পর্শ হয়ে মিরাজুল ইসলাম (২২) নামের এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে মুজিবনগর উপজেলার কেদারগঞ্জ বাজারে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত মিরাজুল ইসলাম উপজেলার ভবানীপুর গ্রামের ইউনুস মণ্ডলের ছেলে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ক্রেতার বাড়ির সিঁড়ির কাজ করানোর জন্য ঝর্ণা স্যানিটারির ছাদের ওপর থেকে স্টিল পাইপ নিচে নামাতে যায় মিরাজুল। পাইপ নামাতে গিয়ে ছাদের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া বিদ্যুৎতের লাইনের সঙ্গে অসাবধানতাবসত স্টিলের পাইপ স্পর্শ করে। এতে সে বিদ্যুৎস্পর্শ হয় এবং ঘটনাস্থলের তার মৃত্যু হয়। খবর পেয়ে মুজিবনগর থানার ওসি আব্দুল হাশেমসহ পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। তিনি জানান, প্রাথমিক তদন্তে বিদ্যুৎস্পর্শ হয়ে তার মৃত্যু হয়েছে এমন প্রমাণ পেয়েছি। নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ না থাকায় লাশ পরিবারের হাতে হস্তান্তর করা হয়েছে।
এদিকে বজ্রাঘাতে ৬ জেলায় ৯ কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। তার মধ্যে রয়েছে নরসিংদীতে ২, শরীয়তপুরে ২, ঢাকায় ১, মাদারীপুরে ১, হবিগঞ্জে ১ জামালপুরে ১ ও ভোলায় একজন।