নগরীর উদয়ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণীর ছাত্র গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। বুধবার সকালে নগরীর কাউনিয়া ক্লাব রোড ঘোষ বাড়ীতে এ ঘটনা ঘটে। মহানগর পুলিশের কাউনিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) হরিদাস নাগ জানান, সামনে পরীক্ষা পড়ালেখা ভালো করেন না। এ নিয়ে পরিবার কথা শোনায়। মুখে দাঁড়ি রাখায় স্কুল থেকে প্রবেশ পত্র দেয়া হয়নি। তাই নানা কারনে ডিপ্রেশনে আত্মহত্যা করেছে। আত্মহত্যাকারী মনি শংকার মুন উদয়ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নবম শ্রেনীর বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র। সে বাকেরগঞ্জের কাকরধা দলিল উদ্দিন আহমেদ ডিগ্রি কলেজের সহকারি অধ্যাপক মানষ কুমার রায়ের পালক পুত্র।মুনের বাবা জানান, তার দুই মেয়ে। কোন ছেলে নেই। তাই মুনের এক বছর বয়সে পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার এক এলাকা থেকে দত্তক নেয়া হয়। সেই থেকে নিজ সন্তানের মতো বড় করা হয়েছে। তাকে কখনো বুঝতে দেয়া হয়নি সে দত্তক সন্তান।মানষ কুমার রায় বলেন, মঙ্গলবার বাসায় ফিরে তার মাকে জানিয়েছে শিক্ষকরা চুল-দাঁড়ি কাটতে বলেছে। তা না হলে পরীক্ষার হলে বসতে দেবে না। এরপর তার মায়ের কাছ থেকে টাকা নিয়ে চুল-দাঁড়ি কেটে বাসায় ফেরে। সন্ধ্যায় গৃহশিক্ষক পড়িয়ে যাওয়ার পর সে রাত সাড়ে ৮টার দিকে নিজ কক্ষের দরজা আটকে দেয়। এরপর থেকে তাকে ডাকাডাকি করা হলে কোন সাড়াশব্দ পাওয়া যায়নি। তাদের ধারণা ছিলো হয়ত রাগ করে ঘুমিয়ে পড়েছে। কিন্তু বুধবার সকালেও দরজা না খোলায় মুনের এক বন্ধুকে ডেকে এনে ঘরে দেয়ালের উপর ফাঁক দিয়ে ভেতরে প্রবেশ করানো হয়। এরপর তারা দেখতে পান পড়ার টেবিলের পাশে জানালার গ্রীলের সাথে ঝুলছে।ঘটনাস্থলে থাকা বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির বিভাগীয় আহবায়ক অধ্যাপক মহসিন উল ইসলাম হাবুল বলেন, স্কুল থেকে মুনকে চুল ও দাঁড়ি কাটতে চাপ প্রয়োগ করে। এছাড়া ঠিকমতো পড়াশুনা করেনি। এ নিয়ে পরিবার থেকে চাপ দেয়া হয়। এর প্রেক্ষিতে ক্ষুব্ধ হয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছে।
অধ্যাপক হাবুল বলেন, শিক্ষক ও অভিভাবকদের উদাসীনতা সন্তানদের আত্মহত্যার প্রবনতার জন্য দায়ী। বিষয়গুলো অভিভাবক থেকে শুরু করে স্কুল শিক্ষক, শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে ভেবে দেখতে হবে এবং এ থেকে পরিত্রানের উপায় বের করতে সরকারকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।
ঘটনাস্থল পরিদর্শনকারী কাউনিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) হরিদাস নাগ জানিয়েছে, মুনের পড়ার টেবিলের পাশের জানালার গ্রীলের সাথে ঝুলছিলো তার লাশ। সেখান থেকে লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। পরিবার থেকে কোন অভিযোগ দেয়া হবে না বলে জানান হরিদাস নাগ।উদয়ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক স্যামুয়েল সবুজ বালা বলেন, অনুমতি পত্র দিয়ে পরীক্ষা দেয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। পরীক্ষার হলে কেউ এ ধরনের কথা বলছে কিনা জানি না। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে শিক্ষকরা সবাই বসেছেন বলে জানান তিনি।
গণমাধ্যম, ঝালকাঠি, দেশজুড়ে, পটুয়াখালী, পিরোজপুর, বরগুনা, বরিশাল, ভোলা, মেইন লিড, শিরোনাম, সাব-লিড, স্বাস্থ্য