বরিশাল জেলা খাদ্য গুদামে জামানত হিসেবে দেয়া ২ কোটি ৬৮ লাখ ৩৬ হাজার ৫০৪ টাকার ১১ টি পে অর্ডার ভুয়া প্রমানিত হয়েছে। এ টাকার বিপরীতে জমা হয়েছে ৭ হাজার এক শ টাকা। এ কথা জানাজানি হবার পর গত রোববার মধ্যরাতে বরিশাল কোতয়ালী থানায় একটি মামলা দায়ের করেছে জেলা খাদ্য বিভাগ।
বরিশাল জেলা খাদ্য বিভাগের কারিগরি খাদ্য পরিদর্শক মোঃ দেলোয়ার হোসেন বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করেন। মামলায় আসামি করা হয়েছে গৌরনদীর এগ্রো লিমিটেডের মালিক মোঃ ফরহাদ হোসেন ও আগ্রনী ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপক মোঃ আলী রেজাকে। পুলিশ ও খাদ্য বিভাগ সুত্রে জানা গেছে, ফরহাদ হোসেন ও আলী রেজা পারস্পরিক যোগসাজসে জেলা খাদ্য বিভাগের অনুকুলে ২০১৮ সালের ১২ ডিসেম্বর থেকে ২০২২ সালের ১৫ জুন পর্যন্ত মোট ২ কোটি ৬৮ লাখ ৩৬ হাজার ৫০৪ টাকার ১১ টি ভুয়া পে অর্ডার দাখিল করে। দাখিলকৃত পে অর্ডারের মোট মূল্য মাত্র ৭ হাজার এক শ টাকা। এতে করে আত্মসাত করা হয়েছে ২ কোটি ৬৮ লাখ ২৯ হাজার টাকা।জেলা খাদ্য বিভাগের কারিগরি খাদ্য পরিদর্শক মোঃ দেলোয়ার হোসেন জানান ১০০ টাকার একটি পে অর্ডারকে দেখানো হয়েছে এক কোটি ৯ লাখ ৩৯ হাজার ৫০৪ টাকার পে অর্ডার। ১০০ টাকার অপর ৮টি পে অর্ডারেও বসানো হয়েছে এক কোটি ৪৯ লাখ ৬২ হাজার ৬০০ টাকা। এছাড়া ২০০ টাকার একটি পে অর্ডারে বসানো হয়েছে ৩ লাখ ৩৪ হাজার ৪০০ টাকা এবং ৬ হাজার টাকার একটি পে অর্ডারে বসানো হয়েছে ৬ লাখ টাকা। ভুয়া এসব পে অর্ডারগুলোর মধ্যে ৬টি করা হয়েছে অগ্রনী ব্যাংক সোনারগাও শাখা নারায়নগঞ্জ থেকে, ৪ টি করা হয়েছে অগ্রনী ব্যাংক পয়শারহাট শাখা এবং একটি করা হয়েছে অগ্রনী ব্যাংক বাটাজোড় শাখা থেকে। এ ঘটনাটি জানাজানি হলে গতরাতে বরিশাল মডেল কোতয়ালী থানায় দুজনকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়েছে। খাদ্য বিভাগ ইতিমধ্যেই উক্ত মিলারের ৩টি মিল কালো তালিকাভুক্ত করেছে। এদের সাথে সম্পাদিত সব চুক্তিও বাতিল করা হয়েছে। বরিশালের পুলিশ কমিশনার মো: সাইফুল ইসলাম বলেছেন, দীর্ঘ দিনেও এতো বড় অংকের জালিয়াতির ঘটনা জানাজানি না হওয়াটাও রহস্যজনক। এর সাথে অন্য আরো কারা জড়িত থাকতে পারে তাও অনুসন্ধানে কাজ করা হচ্ছে।
এদিকে মামলার আসামিরা ইতিমধ্যেই গা ঢাকা দিয়েছে। এদের ধরতে পুলিশের বিশেষ টিম নামানো হয়েছে।
তবে নির্ভরযোগ্য সুত্র বলেছে, বরিশাল খাদ্য অফিসের একাধিক লোক এই জালিয়াতির কথা জেনেও চুপ থেকে ছিল। এরাও এই অপরাধের সাথে জড়িত।