চার বছরের অপহৃত রোহিঙ্গা শিশু উদ্ধার!! মায়ের কোলে ফিরে এলো রায়হান……..
চার বছরের রোহিঙ্গা শিশু রায়হান। আবু জাফর একজন রোহিঙ্গা শরণার্থী। তার স্ত্রী রায়হানকে পেটে করে বাংলাদেশে আসে। অতঃপর রায়হানের জন্ম হয় উখিয়ার শরণার্থী ক্যাম্পে। একটু একটু করে এই বাংলার আলো বাতাসে বেড়ে ওঠে রায়হান।
প্রতিদিনের মতো সমবয়সীদের সাথে মাঠে খেলাধুলা করতে যায় সে। হঠাৎ দুইজন অপরিচিত লোক এসে রায়হানকে ২০ টাকা দিয়ে তাদের নিকট ডাক দেয়। কিছু বুঝে ওঠার আগেই রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী সাদেক ও ফয়সাল ক্যাম্প থেকে কৌশলে বের করে নিয়ে যায় শিশুটিকে।
এরপর তাকে সিএনজিতে করে নিয়ে যায় টেকনাফ থানাধীন নয়াপাড়া রেজিস্টার্ড ক্যাম্পের পিছনে দুর্গম পাহাড়ে। শিশুটি বারবার বাবা-মায়ের কাছে যেতে চাইলে তার উপরে চালানো হয় পাশবিক নির্যাতন। চর-থাপ্পর এমনকি লাথি মারে শিশুদের গায়ে যাতে সে শব্দ করতে না পারে। ভয়ে নির্বাক হয়ে যায় শিশুটি।
মুক্তিপণের টাকা আদায়ের জন্য ছোট্ট শিশুটিকে মারধর করে তার বাবা মাকে শোনানো হয় কান্নার শব্দ। ২ লক্ষ টাকা দিতে হবে নয়তো বাচ্চাটিকে মেরে লাশ জঙ্গলে ফেলে দিবে এমন হুমকি প্রদান করে নরপিচাশ সাদেক।
অপহরণের সংবাদ থানায় আসা মাত্রই শুরু হয় আমাদের কার্যক্রম। মান্যবর পুলিশ সুপার মহোদয়ের নির্দেশ “যেভাবেই হোক যত দ্রুত সম্ভব শিশুটিকে সম্পূর্ণ সুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করতেই হবে” অত্যন্ত কৌশলে ধীর স্থিরভাবে আমরা অগ্রসর হতে থাকি। গভীর রাতে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অভিযান পরিচালনা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ জেনেও আমরা পিছ পা হয়নি।
তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় আসামি ও ভিকটিম এর অবস্থান নির্ণয় করে উখিয়া থানার চৌকস, পরিশ্রমী, আন্তরিক পুলিশ সদস্যদের নিয়ে দুর্গম পাহাড়ে শুরু হয় সাঁড়াশি অভিযান। নির্ঘুম কাটে রাত-দিন, বুকে অদম্য আশা। সফলতা চাই আমাদের।
অবশেষে গভীরে রাতে নয়াপাড়া রেজিস্টার ক্যাম্পের সি-ব্লকের হোসেনের ঘরে রোকসানার কাছ থেকে রায়হানকে উদ্ধার করা হয়। গ্রেফতার করা হয় সাদেক ও তার সঙ্গীয় ফয়সালকে।
মায়ের কোলে ফিরিয়ে দেই শিশু রায়হানকে। এ যেন এক ঐশ্বরিক তৃপ্তি! পুলিশি জীবনের চরম পাওয়া!!
অপরাধীদের গ্রেফতার করে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করতে সদা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ কক্সবাজার জেলা পুলিশ।