করোনার দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলায় গত ১ এপ্রিল থেকে পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে পর্যটকদের অবস্থান নিষিদ্ধ ঘোষনণা করা হয়। এতে কর্মহীন হয়ে পড়ে পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী ও খেটে খাওয়া মানুষ। ফলে বিকল্প কর্মসংস্থান না থাকায় ঝিমিয়ে পড়েছেন অনেকেই। তবে পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটায় অর্থচালিকা স্বচল রাখতে ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নিয়ে ঘুরে দাড়াঁনোর প্রচেষ্টায় বদ্ধপরিকর অদম্য এক যুবক।মো. বাচ্চু খলিফা পেশায় একজন ট্যুরিজম ব্যবসায়ী। পাশাপাশি তিনি আন্ধারমানিক ট্যুরিজম নামের একটি প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক। কুয়াকাটার নৈসর্গিক সুন্দর্য উপভোগ করতে আসা দূর-দূরান্ত থেকে আগতদের সমুদ্রে ভ্রমণের বিনিময়ে পরিবার নিয়ে জীবীকা নির্বাহ করতেন এই যুবক। মূলত তিনি সমুদ্রে ফাইবারের ২ টি ওয়াটার বোড (ইঞ্জিন চালিত নৌকা) ভাড়া দিতেন পর্যটকদের কাছে। কিন্তু গত বছরের মতো এ বছরও করোনার কারণে লকডাউন ঘোষণা করায় ফের বন্ধ হয়ে যায় আয়ের পথ। তবে লকডাউনের এসময়টাতে ঘুরে দাঁড়াতে এবার ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নিয়েছেন তিনি।
ফলে কুয়াকাটা পৌরসভার ৬ নং ওয়ার্ডে নবীনপুরে নিজ বাড়িতেই আয়ের উৎস্য তৈরি করেছেন, পেয়েছেন পারিবারের সহযোগীতা এবং স্ত্রীর অনুপ্রেরণায়। ফলে সদানন্দে গড়ে তুলেছেন বিভিন্ন প্রজাতির পশু পাখির খামার।একটি শেড নির্মাণ করে কয়েকটি দেশি জাতের ছাগল পালন করে এরই মধ্যেই লাভের মুখ দেখেছেন তিনি। শুধু ছাগল নয় ছোটো ছোটো শেড নির্মাণ করে চাষ করছেন কবুতর, টারকি, দেশীয় হাঁস, মুরগিসহ বিরল প্রজাতির ইমু পাখি। সংসারের উপর্জনক্ষম ব্যক্তির কর্মনিপুণতায় এখন পরিবারের সদস্যরাও বেজায় খুশি। নতুন এ উদ্যোক্তা মো. বাচ্চু খলিফা ডেইলি বাংলাদেশকে জানান, লকডাউনে একেবারে কর্মহীন হয়ে পড়েছিলাম। তাই বেকার সময় না কাটিয়ে বাড়িতেই কিছু একটা করবো ভেবে পশু পাখি পালনের উদ্যোগ নেই। বর্তমানে আমার মিনি খামারে ৩০ টি ছাগল, ১৩ জোড়া হাঁস, ২৫টি মুরগি, ৬ জোড়া টারকি, ১০ জোড়া কবুতর রয়েছে। সব শেষে ৭ দিন বয়সী এক জোড়া ইমু পাখি ১৮ হাজার টাকায় কিনে এনেছি।
এক মাসের ব্যবধানে এখন ইমু পাখির দাম প্রায় ২৩ হাজার টাকা। তিনি বলেন, ১ লাখ ৮০ হাজার টাকায় কেনা ছাগলের বাজার মূল্য এখন প্রায় ২ লাখ ২০ হাজার টাকা। পুকুরে মাছ চাষ, ছাগল পালনসহ খামারে সবকিছু পালনে মাসে মোট খরচ ছয় হাজার টাকা। এ উদ্যোক্তা জানান, নিজের জমানো কিছু টাকা এবং আমার স্ত্রীর গয়না বন্ধক রেখে এ কার্যক্রম শুরু করি। পরিবারের সদস্যদের নিয়ে নিজে শ্রম দেন বলেই অনেকটা সাশ্রয় পাচ্ছেন বলে লাভের আসা করছেন তিনি। সরকারি সহায়তা পেলে বেকারত্ব ঘোচাতে ভবিষ্যতে আরো বড়ো আকারে খামার করবেন বলে অভিমত এ যুবকের। কুয়াকাটা পৌর মেয়র আনোয়ার হাওলাদার বলেন, এটা আসলেই একটা ভালো উদ্যোগ, বিকল্প কর্মসংস্থান হিসেবে লকডাউনে কর্মহীনদের জন্য উৎসাহ যোগাবে।উপজেলা প্রানীসম্পদ কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান বলেন, এধরনের উদ্যোক্তাদের আমরা স্বাগত জানাই। অবশ্যই তাকে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে প্রণোদনার আওতায় আনা হবে।
দেশজুড়ে, বরিশাল, বরিশাল বিভাগ, শিরোনাম, সাব-লিড